| |
               

মূল পাতা আন্তর্জাতিক গাজ্জায় গণহত্যার বিভীষিকাময় বর্ণনা দিলেন ইসরাইলি সেনা


গাজ্জায় গণহত্যার বিভীষিকাময় বর্ণনা দিলেন ইসরাইলি সেনা


আন্তর্জাতিক ডেস্ক     07 July, 2025     08:34 PM    


গাজ্জা উপত্যকায় তিনবার দায়িত্ব পালন করা ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলি বাহিনীর এক সেনা স্কাই নিউজকে দেওয়া এক বিরল ভিডিও সাক্ষাৎকারে গণহত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন। এমনকি তিনি এই ভয়াবহ গণহত্যার জন্য নিজেকে ভেতর অনুসূচনাও বোধ করছেন বলে জানিয়েছেন।

তিনি জানান, তার ইউনিটকে প্রায়ই আদেশ দেওয়া হতো, সেনারা যেসব এলাকাকে “নো-গো জোন” বলে চিহ্নিত করেছে, সেখানে যে-ই প্রবেশ করুক, তাকে গুলি করে হত্যা করতে হবে। সে ব্যক্তি সশস্ত্র হোক বা নিরস্ত্র।

ওই সেনা আরো বলেন, যেই আমাদের নির্ধারিত এলাকার মধ্যে ঢুকেছে, সেই মারা যাবে। ভেতরে ঢুকলে বিপজ্জনক, তাকে মেরে ফেলতে হবে। কে তা গুরুত্বপূর্ণ নয়।

নিরাপত্তাজনিত কারণে ওই সেনা তার নাম গোপন রেখে কথা বলেন।

তিনি বলেন, গাজায় বেসামরিক মানুষদের নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করা হতো এবং নিয়মিত আদেশ পরিবর্তনের কারণে সেনাদের আচরণ নির্ভর করত কমান্ডারের মেজাজের ওপর। সেনাটি ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সের (আইডিএফ) ২৫২তম ডিভিশনের সদস্য।

তিনি যুদ্ধের শুরুতে গাজ্জার কেন্দ্র দিয়ে কাটানো ‘নেটজারিম করিডোরে’ দুটি মেয়াদে মোতায়েন ছিলেন। যা গাজ্জা ভূখণ্ডকে দুই ভাগে ভাগ করে দেয় এবং ভেতর থেকে নিয়ন্ত্রণ সহজ করে।

তিনি বলেন, আমরা একবার এমন একটি ঘর দখল করি যেখানে এক সময় গাজাবাসীরা থাকত। সেই ঘর ঘিরে একটি অদৃশ্য রেখা টেনে দেওয়া হয়, যাকে বলা হতো “নো-গো জোন”। বলা হতো, গাজ্জার সব মানুষ জানে এই লাইন পার হওয়া মানা। কিন্তু বাস্তবে, তারা জানবে কীভাবে?

তিনি আরো জানান, অনেক সময় কিশোর বাইসাইকেল চালিয়ে এই সীমানায় চলে এলে তাকেও গুলি করা হয়েছে।

এই সেনা আরো বলেন, সেনারা অনেকেই মনে করতেন, গাজ্জার কেউই নির্দোষ নয়। হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার জন্য পুরো গাজ্জা জনগণকে দায়ী করা হচ্ছিল। কিছু সেনা বলতো, ওরা কিছু করেনি আমাদের বাঁচাতে, বরং আনন্দ করছিল আমাদের কষ্ট দেখে। কাজেই ওদের মরাই উচিত।

তিনি বলেন, নিয়মিত এই ধরনের আলোচনা হতো এবং অধিকাংশ কমান্ডার এই মনোভাবকে সমর্থন করতেন। তিনি অভিযোগ করেন, কেউ কেউ ইচ্ছেমতো যুদ্ধাপরাধ করছে আর তার জবাবদিহিতা নেই।

তিনি বলেন, সব কিছু যেন “ওয়াইল্ড ওয়েস্ট” হয়ে গেছে। যে কমান্ডার যা ইচ্ছা করছে। কেউ ধরা পড়ছে না, বিচার হচ্ছে না।

তিনি জানান, অনেক সময় একই দিনে আদেশ বদলানো হতো; কখনো গুলি চালাতে, কখনো বন্দি করতে। একটি ঘটনায় তিনি দেখেছেন, এক ব্যক্তি অদৃশ্য সীমা পার হলে তাকে গুলি করা হয়। পরে আরেকজন তার মরদেহ নিতে এলে তাকেও গুলি করা হয়। এরপর নতুন আদেশ হয়, মরদেহের কাছে এলে বন্দি করো। আবার কিছু ঘণ্টা পর, সবাইকে গুলি করো।

তিনি বলেন, আমার মনে হয় আমি একটা খারাপ কিছুতে অংশ নিয়েছি, তাই ভালো কিছু করতে চাই সত্য প্রকাশ করে।

তিনি আরো বলেন, আমি মনে করি যুদ্ধে আমাদের এবং ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে খুব খারাপ কিছু ঘটছে এবং এটির অবসান হওয়া উচিত।

তিনি  বলেন, ইসরাইলি সম্প্রদায়ের মধ্যে নিজেদের এবং তাদের সেনাবাহিনীর সমালোচনা করা খুব কঠিন। অনেকেই বুঝতে পারছেন না যে, তারা কী করতে রাজি হচ্ছেন। তারা মনে করেন যুদ্ধ হওয়া উচিত এবং আমাদের জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা উচিত, কিন্তু তারা এর পরিণতি বোঝেন না। অনেক মানুষ, যদি তারা ঠিক কী ঘটছে তা জানত, তবে এটি ভালোভাবে নিত না। তারা এর সঙ্গে একমতও হতো না। আমি আশা করি এটি সম্পর্কে কথা বলার মাধ্যমে, এটি কীভাবে কাজ করা হচ্ছে তা পরিবর্তন করতে পারে।

ওই সেনা জানান, তিনি নিজের পরিচয় গোপন রেখেছেন কারণ ইসরাইলি সেনাবাহিনীকে প্রশ্ন করা সামাজিকভাবে নিষিদ্ধ প্রায় এবং তিনি দেশদ্রোহী হিসেবে বিবেচিত হতে পারেন। এদিকে এই অভিযোগ সম্পর্কে

সূত্র : স্কাই নিউজ